রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক
ক্ষেত্রে নানাবিধ ঘটনার কারণে ষাটের দশক আরো বেশি স্বাতন্ত্র্য নিয়ে হাজির হল। ৫৯-এর
শেষপর্বে সংগঠিত খাদ্য-আন্দোলনের যঙ্গে ৬০-এ এসে একে একে যুক্ত হল রেলধর্মঘট, ভিয়েতনাম-যুদ্ধ, চিন-ভারত
ও চিন-পাকিস্তান যুদ্ধ। সাম্যবাদীদের মধ্যে প্রবল
হল মতাদর্শের দ্বন্দ্ব। কমিউনিস্ট পার্টিও তখন দুভাগ। অতঃপর শেষের দিকে কংগ্রেসি শাসনের অবসান ঘটিয়ে পশ্চিমবঙ্গে যুক্তফ্রন্ট
সরকারের পত্তন। তারও পরে অতিবামপন্থীদের হাত ধরে নকশাল আন্দোলনের সূচনা। রাজনৈতিক
পালা বদলের মতো সমূহ বিপন্নতা ও ক্ষুৎ-পীড়িত যন্ত্রনাবোধ থেকে এই দশক সাহিত্যিক পরিসরেও অনেক আন্দোলনের জন্ম
দিল।হাংরি-শ্রুতি-শাস্ত্রবিরোধী-ধ্বংসকালীন-নিমসাহিত্য। এদের মধ্যে হাংরি-জেনারেশনের গায়ে পুলিশী ছোঁয়া লাগার
কারণে তা অবশ্য আলাদা মাত্রা পেয়ে গেছে। হাংরিদের কাছে ক্ষুধা মানে অবশ্যই
ভুখা-মিছিলে পা মেলানো ছিল না, সে-ক্ষুধা আসলে সাহেবি সভ্যতার প্রভাবে জাত মধ্যবিত্ত
যুবককুলের এক ধরণের তীব্র রিরংসার প্রকাশ। যাকে প্রতিষ্ঠানের হর্তা-কর্তারা
সহজভাবে মেনে নিতে পারেনি। আইন-আদালত
হল। কবিকে দাঁড়াতে হল কাঠগড়ায়। ফলে তা বাংলা কবিতায় এক অন্য ইতিহাস তৈরি করল।
৩০-৪০-৫০এর দশকে
কবিরা ছিলন কুশলী শব্দশিল্পী। নাগরিক অভিজ্ঞতা ও অন্বেষণেই তাঁদের শিক্ষিত মনের
প্রকাশ ঘটেছিল। কবিতা লিখতে গিয়ে তাঁরা কোনো তত্ত্বের ধার ধারেননি।কিন্তু আগের
সময়ের সেই সব লেখালিখিকে নতুন প্রজন্মের পছন্দ হল না। তাঁদের মনে হল এইভাবে সাহিত্যিক
পরিসরে একটা সম্পূর্ণ স্থিতাবস্থা তৈরি হয়েছে। তাঁদের মনে হল এর বিরুদ্ধে একটা সংগঠিত বিদ্রোহ দরকার। তরুণ তুর্কিরা সকলেই
তখন পশ্চিমের ধাঁচে এক
একটা দল বানিয়ে নিজস্ব তত্ত্ব বা তত্ত্বহীনতা তৈরি করে নিজের নিজের মতো চেষ্টা
করলেন সেই অচলায়তনকে ভাঙার। চরিত্র এক না হলেও সব আন্দোলনই তাই প্রচলিত রীত-নীতির
বিরুদ্ধে। নিয়ম ও শাসনের দুর্গে কামান দাগা। সুতরাং তাঁদের লেখালিখি ও কাজকর্মে প্রাতিষ্ঠানিক রীতি-নীতির প্রতি একটা তীব্র
হতাশা ও ব্যর্থতার জায়গা থেকে কবিতায় প্রচুর হইহল্লা নিয়ে বেপরোয়া ভাবে হাজির হল মাত্রাছাড়া
ক্লেদ, পাপ, নৈরাজ্য, যৌনতার মতো যত ভয়ংকর ও অভিশপ্ত চিন্তা-ভাবনা। আদিযুগে
চর্যাপদের ডোম্বীর প্রান্তিক-বাংলায় জন্ম নেওয়া গ্রাম্য যৌনতা যমুনাপারের
কুঞ্জবনের খোলা হাওয়ায় পূর্ণ-বিকশিত দেহবিলাস হয়ে মধ্যযুগের প্রান্তে এসে সেঁদিয়ে
গেছিল বিদ্যাসুন্দরের সুড়ঙ্গে, তারপর কবিগানের আসর থেকে কল্লোল-পর্বে বস্তি ও
বেশ্যাপল্লী ছুঁয়ে তা আধুনিকতার এই
চুড়ান্তপর্বে
জায়গা করে নিল তীব্র নাগরিকের বিকৃত মানসিকতায়। তবু বিশেষজ্ঞদের মতে প্রচুর ভালো-মন্দ মিলিয়ে ষা্টের দশকে বাংলা
কবিতায় ভিন্ন উচ্চারণের অনেক নতুনতর স্বর যুক্ত হল। তাত্ত্বিক সাংকেতিক আত্মজৈবনিক অশ্লীল বৈপ্লবিক
প্রতিক্রিয়াশীল বিষণ্ণ স্ফূর্তিবাজ হাসি-ঠাট্টা রক্তক্ষরণ আত্মধ্বংসী এই রকম সব নানা স্বর ও সুরের
সমাবেশে সামগ্রিকভাবে এই সময়ের কবিতা হয়ে উঠল বর্ণময়।
তবে ষাটের দশক আরেকটি
কারণে বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য হয়ে রইল। সেটা হল বাংলা কবিতার জগতে বৃহৎ-পুঁজির অনুপ্রবেশ। এর আগে পর্যন্ত যে সব পত্র-পত্রিকায়
কবিতা ছাপা হত তারা ছিল সাহিত্যের প্রতি ষোলো আনা উৎসর্গীকৃত। সাহিত্যের কল্যাণের একটা বিশেষ দায়-দায়িত্বের
জায়গা থেকে কিছু সাহিত্য-পাগল লোকজন সেই সব কাগজ বের করতেন। আর্থিক লাভ-লোকসানের
হিসেব তাঁদের ছিল না। কিন্তু বিশেষ কিছু কারণে কাব্য-জগতের উপর হঠাৎ করে বেনিয়া-সমাজের নজর পড়ল। তারা তাদের মূলধন সমেত ঢুকে
পড়লেন এই বঙ্গের সাহিত্যিক পরিসরে। এর পিছনে অবশ্যই ছিল স্বার্থবুদ্ধি। এই
স্বার্থবুদ্ধিরও আবার বেশ কয়েকটি দিক ছিল। প্রথম্ত, অর্থনৈতিক মুনাফা। দ্বিতীয়ত,
সাহিত্যের সমজদার ও পৃষ্ঠপোষকের মুখোস পরে তার বাজারটিকে পুরোপুরি নিজেদের দখলে
এনে তার উপর একাধিপত্য কায়েম করা, খবরদারি ও নিয়ন্ত্রণ জারি করা। তৃতীয়ত, নিজেদের
মতো করে পাঠকদের রুচি তৈরি করা। সব মিলিয়ে সাহিত্যের আন্দোলনমুখিনতাকে অবদমিত করা।
এক কথায় কবি-লেখকদের মেধাকে নিজেদের একচেটিয়া কারবারের কাজে লাগানো। সব দিক দিয়ে
দেখলে তাই সাহিত্যের সেবা করা নয় তাদের কাছে মুখ্য হয়ে উঠল সাংস্কৃতিক
আধিপত্যবাদের প্রতিষ্ঠা। এই কাজ করতে গিয়ে তারা প্রথমেই লেখার ক্ষমতা আছে এমন কিছু
মানুষকে মুদ্রার বিনিময়ে বশ করে নিল। তাদের সেরার শিরোপা দিল। নিজেদের বহুল
প্রচারিত পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে
বিপুল প্রচারের সুযোগ করে দিল। কাউকে
বানালো সাংবাদিক কাউকে দিয়ে লেখালো খেলাদুলো থেকে রূপচর্চার বিষয়ে নানান ফিচার ইত্যাদি। তারপর প্রয়োজন মিটে গেলে কাউকে কাউকে ছিবড়ে করে আবর্জনার
স্তুপে ছুঁড়ে ফেলে দিল।
সত্তরের দশক বাঙালির সমাজ জীবনের আর এক উত্তাল, অস্থিরসময়। নকশালবাড়ির কৃষক আন্দোলনের আকর্ষণে ঝাঁপিয়ে পড়লেন হাজার হাজার তরুণ অপরাজেয় রাষ্ট্রশক্তির বন্দুক-বেয়োনেটের সামনে।কাশীপুর, বরানগরের ট্রাকভর্তি লাশ উধাও হয়ে গেল গঙ্গা গর্ভে, বস্তাবন্দি লাশ বারাসাতের রাস্তায়, মৃতদেহ মাড়িয়ে বাড়ি ফিরছে মানুষ, কয়েদখানায় হত্যা –আমাদের জীবনে তা আগুনের আলপনা এঁকে দিল।
সত্তরের প্রথম পর্ব যদি হয় এক মৃত্যুর চালচিত্র
তাহলে তার দ্বিতীয় পর্ব হাজির হল আরেক মেজাজ নিয়ে। জরুরি অবস্থার কালো দিনগুলির
অবসান ঘটল, ইন্দিরা গান্ধির পতন ঘটল। কেন্দ্রে প্রথম অ-কংগ্রেসি মন্ত্রীসভা গঠিত
হল। আর সাধারণ মানুষের অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষাকে সঙ্গী করে রাজ্যে ক্ষমতাসীন হল
বামফ্রন্ট।
সত্তর দশকের বাংলা কবিতায়
অন্য আন্দোলন না থাকলেও রাজনৈতিক আন্দোলনের ছায়া তীব্র হয়ে রইল। একটা বড়ো অংশের
কবিতার মধ্যে সমাজ-জীবনের এই জমে ওঠা
অসন্তোষের সাহসী প্রকাশ ঘটল। অনেকেই কলম ধরলেন সংগ্রামের লক্ষ্যে।সময় চেতনায়
উজ্জ্বল নিরাবরণ অথচ তীক্ষ্ণ গদ্যে লেখা সরল খোলা ভাষায় লেখা সেই সব কবিতায় ধরা
রইল সেই সময়ের রক্তছবি। আবার সেসবের মধ্যে না গিয়ে অনেকে সুশিল্পিত নাগরিক
পরিমার্জিত উজ্জ্বল কাব্যলেখায় ঝুঁকে পড়লেন। তবে এই সময়ে সাহিত্য-জগতে আরেক একটা নীরব বিপ্লব ঘটে
গেল। ‘চিনের চেয়ারম্যান আমাদের চেয়ারম্যান’ ঘোষণাকারী অতি-বামপন্থী বিপ্লবীরা
বলেছিলেন সশস্থ কৃষিবিপ্লবের কথা। ডাক দিয়ে ছিলেন গ্রাম দিয়ে শহর দখল করার কথা।
রেডবুক আর রাইফেল হাতে নিয়ে এই স্বপ্নের পিছনে ছুটতে গিয়ে একটা গোটা প্রজন্মের কত
যে তরুণ তাজা প্রাণ অকালে ঝড়ে গেল।
রাজনৈতিক পরিসরে মাও-দে-জংয়ের
ভাবশিষ্যদের রোম্যান্টিক বিপ্লব-বিলাস সফল হল না বটে, তবে সাহিত্যের আঙ্গিনায়
কিন্তু প্রবলভাবে উঠে এল শহরতলি ও গ্রাম। এর আগে বাংলা কবিতায় যে সব বদল ঘটেছিল
সবার ভিত্তি ছিল কলকাতাকেন্দ্রিক নাগরিকতা।কিন্তু ষাটের দশকের শেষ দিক থেকেই সেই
পরস্থিতি বদলাতে শুরু করল। বাণিজ্যিক পত্রিকার বিপরীতে কলকাতার সীমানা ছাড়িয়ে ছোটো
পত্র-পত্রিকা প্রকাশের ঢেউ লাগল দূর দূরান্তের গ্রাম-গঞ্জ-মফসসলে। ক্ষণজীবী-দীর্ঘজীবী
সেইসব ছোটো-বড়ো লিটিল-ম্যাগাজিনকে কেন্দ্র করে আত্ম-প্রকাশ ঘটল অনেক
কবি-সাহিত্যিকের। বাণিজ্যক পত্রিকা যেখানে বাজারি লেখালেখিতে মগ্ন রইল সেখানে কলকাতার
বাইরে কবিতা-চর্চায় যেন একটা জোয়ার এল। দেখা গেল লিটিল ম্যাগাজিনগুলিতে চলছে
আঙ্গিক ও বিশয়-আশয় নিয়ে নতুন নতুন পরীক্ষা-নিরীক্ষা। যা বাংলা-সাহিত্যকে ধ্বংসের
হাত থেকে রক্ষা করে এক নতুন প্রাণের সন্ধান দিল। গল্প-কবিতায় বেশি বেশি করে হাজির
হল গ্রামীণ মানুষ, গ্রামীণ পরিবেশ গ্রামীণ শব্দ, গ্রাম্য মাটির সোঁদাগন্ধ। বাজারি পত্রিকার বাইরের কবি-সাহিত্যিকরাও প্রমাণ করলেন আঙ্গিকের
উপর দখল, বাকভঙ্গির নিপুনতা, অনুভবের গভীরতা, ভাবের সংহতি, প্রকাশের বৈচিত্র এসব
কিছুতে তাঁরাও কিছু কম যান না। বরং অনেক তথাকথিত খ্যাতিমানের চেয়ে তাঁদের অনেকে
বেশ এগিয়ে আছেন। প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতাহীন এইসব সাহিত্য-পত্রিকাগুলি থেকেই
পরবর্তী সময়ের অনেক শক্তিশালী কবি;এলহকের জন্ম হল। পাশাপাশি সত্তরের দশকেই মহিলা
কবির সংখ্যাবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে পেল। তাঁরাও
হাজির হলেন নারীদের নিজস্ব ভাবনা নিয়ে।
সত্তরের পরবর্তী আশির দশককে আমার মনে হয় যেন একটা শূন্যতা বোধের সময়কাল। তেমন কোনো নতুন প্রত্যয়ের সন্ধান পাওয়া গেল না। নতুন কোনো উপপাদ্য উঠে এল না। এই সময়ের লেখালিখি একটা গতানুগতিকার মধ্যে আবর্তিত হল। অবশ্য তার পিছনে সমকালীন রাজনৈতিক স্থবিরতারও একটা অবদান
আছে। বামপন্থী সরকার ক্ষমতায় আসার পর একটা নতুন অধ্যায় শুরু
হয়েছিল। মার্কসবাদীরা বিপ্লবের স্বপ্নে জলাঞ্জলি দিয়ে সংসদীয় রাজনীতির
আঙিনায় এসে চেষ্টা করলেন পঞ্চায়েতের মাধ্যমে ক্ষমতার বিকেন্দ্রিকরণ থেকে শুরু করে অপারেশন-বর্গা, খাস-জমি দখল ও পাট্টা-বিলি, মজুরি-বৃদ্ধি আন্দোলন এই সব করে খেটে-খাওয়া মানুষের পাশে থাকতে। প্রথম প্রথম সাফল্যও এল। জনগণ এই বামপন্থাকে সাদরে বরণ করে নিল। ভূমি-সংস্কারের লক্ষ্যে এইসব পদক্ষেপ গ্রামীণ অর্থনীতিতে একটা যুগান্তকারী পরিবর্তন
এনে দিল। কিন্তু তারপর ছবিটা একটু একটু করে বদলাতে শুরু করল। ক্ষমতার-বৃত্তে বিচরণ করার সুবাদে তার আনুষঙ্গিক দোষগুলি সর্বহারার নেতাদেরও রেহাই
দিল না। দেখা গেল ছোটো-বড়ো-মেজো কমরেডরাও আস্তে আস্তে দুর্নীতি-স্বজনপোষণ-বিরূপ সমালোচনার প্রতি খড়্গহস্ত-দম্ভ-অহংকার-স্বৈরাচারী
মনোভাব ইত্যাদি যাবতীয় বদগুণগুলিতে রপ্ত হয়ে গেছেন।
গ্রামীণ সমাজের এই পরিবর্তন কিন্তু শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শহুরে
মানুষদের নতুন কোনো দিশা দেখাতে পারল না। তাদের
জীবনযাপন হল বৈচিত্র্যহীন। এই সময়ের
কবি-সাহিত্যিকদের অনেককেই দেখা গেল লিটিল-ম্যাগাজিনগুলিকে আঁতুড়-ঘর হিসেবে ব্যবহার করে বাজারি-পত্রিকায় জায়গা পেতে
চাইছেন, অনেকেই আবার ক্ষমতার কাছাকাছি থেকে নানা রকম সরকারি পুরস্কার ও বদান্যতা
পাবার আশায় নেতা-মন্ত্রীদের মোসাহেবি শুরু করেছেন। আবার যে-সব ছোট-পত্রিকা ততদিনে
বেশ নাম-ডাক তৈরি করতে পেরেছে তাদের সম্পাদক ও কর্তাব্যক্তিদের মধ্যেও বেশ একটা
উন্নাসিক ও আঁতলেমির ভাব গড়ে উঠেছে।
আরেক দিক দিয়ে প্রযুক্তির কল্যাণে সাউন্ড-রেকর্ডিং-এর দুনিয়াতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসার কারণে প্রথমে লং-প্লেয়িং
রেকর্ড তারপর ক্যাসেট এর মাধ্যমে কবিতা-আবৃত্তি শিল্পের একটা রমরমা ব্যবসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বাচিক-শিল্পীরা
আবাব্র সেইসব কবিতাই বেশি পছন্দ করছেন যেগুলিতে বেশ আবেগ আছে, গল্প আছে,
মাইক্রোফোনের সামনে নাটকীয় উপস্থাপনার মাধ্যমে যা পাবলিককে বেশ খাওয়ানো যায় এমন সব
রসদ আছে। বাইরের নিস্তরঙ্গ জীবনে ক্লান্ত এই সময়ের কেউ কেউ
অবশ্য মন দিলেন কবিতার আঙ্গিক পরিবর্তনে। তাঁদের মতো করে তাঁরা কবিতার ভাষা-বদলের কিছু
চেষ্টা করলেন, কিন্তু সেসবের মধ্যে কোনো উত্তরণ দেখা দিল না। আশির দশককে অনেকেই
কল্পনা করেছিলেন মুক্তির দশক হিসেবে কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল কবিদের কাছে তার কোনো
সুসংহত ভাব নেই, নতুন কোনো প্রেরণা নেই, স্ফূর্তির মেজাজ নেই, কেমন নীরস ও জোলো।